সবাই জানুক বিটিআরসি আমাদেরকে সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী করতে চায়।

বিটিআরসি চাচ্ছে, এক এনআইডি দিয়ে ২টার বেশী সিম রাখা যাবে না। 
তারা প্রথমে ১০টিতে আনলো, তারপর এখন ৫টিতে যেতে চাচ্ছে।
এরপর ২টিতে তারপর ১টিতে আনবে।

আপনার মনে হতে পারে, এটা খুবই ভালো কাজ।
আসলে এইটা একটা জনবিরোধী সিদ্ধান্ত। 

মোবাইল ফোন অপারেটর গুলাই টাকা পয়সা দিয়ে এই কাজ করাতে চাচ্ছে।

এতে আপনি এক দুইটি সিমের বেশী ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে আপনি কোনো না কোনো অপারেটরের কাছে আটকে যাচ্ছেন।
একই নাম্বার দিয়ে বারবার অপারেটর চেঞ্জ করার ঝামেলাতেও যেতে চাচ্ছেন না।
অপারেটর গুলোর নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছেনা।

তারা তখন নিজেদের গ্রাহকের সাথে যাতা অফার দিয়ে, যাতা রেইট দিয়ে চলতে পারবে। কারণ, আপনার হাতে অনেকগুলো অপশন নাই।

এটাকেই বলে সিন্ডিকেট। সবাই মিলে সিন্ডিকেট করে রাখা। সিন্ডিকেট করে গ্রাহককে তাদের হাতে বন্দী করে ফেলা।

একটা ঘটনা শুনেন। 
মহেশখালী হাসপাতালের সামনে অনেকগুলো ফার্মেসী আছে। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল, রাত ১২টার পর মাত্র একটা করে ফার্মেসী খোলা থাকবে।
একটা শনিবারে, একটা রবিবারে এভাবে একেকদিন পালা অনুযায়ী একেকজন খোলা রাখবে।

প্রাথমিকভাবে আপনার মনে হতে পারে যে, রাত ১২টার পর একটা ফার্মেসী খোলা আছে, এটা তো ভালো ব্যাপার।

আসলে হচ্ছে, উল্টো। 
সিন্ডিকেট না থাকলে রাতে অনেকগুলো ফার্মেসী খোলা থাকতো। এখন নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় এসে সিন্ডিকেট করায় খোলা থাকছে মাত্র একটা।
আপনার হাতে কোনো দ্বিতীয় অপশন নাই।

তার কাছে থাকা অষুধই আপনাকে কিনতে হচ্ছে। আপনার হাতে কোনো বিকল্প নাই।

ঠিক এই কাজটাই মোবাইল অপারেটর গুলো বিটিআরসিকে দিয়ে করাতে চাচ্ছে।

বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত সবচেয়ে করাপ্টেড খাতগুলোর একটি।
টেলিটকের সেবা যাতে উন্নত না হয়, সে জন্য গ্রামীন এবং রবি বিটিআরসির চেয়ারম্যান সহ এই খাতে আগে বছরে কয়েকশ কোটি টাকা ঘুষ দিত।

আমরা জানতে চাই, এভাবে সিন্ডিকেট করার জন্য কত টাকা ঘুষ দেয়া হয়েছে?

দেখেন, আমরা আমাদের এনআইডি এবং বায়োমেট্রিক দিয়ে সিম কিনছি।
আমরা যদি প্রত্যেকটা অপারেটরের কয়েকটা করে সিম কিনে ইউজ করি, তাতে বিটিআরসির সমস্যা কোথায়?

আমরা তো চুরি করে সিম চালাচ্ছি না। আমাদের সিমের বিপরীতে আমাদের হাতের ছাপ, এনআইডি আছে। 
আমরা কোনো অপরাধ করলে সেটা দিয়ে খুঁজে বের করতে পারবে।

একেকজন পুরুষ তার এনআইডি দিয়ে তার ফ্যামিলীর সবার সিম কিনে। বাবার এনআইডি দিয়ে মা, ভাই, বোনদের সিম কেনা থাকে।

একসাথে সব সিম বাতিল করে এক দুইটাতে নামিয়ে আনলে মানুষ প্রতিবাদ করবে। তাই তারা আস্তে আস্তে করে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কৌশল নেয়।
প্রথমে দশে, তারপর পাঁচে, এরপর দুইয়ে। এভাবে।

১০টার বেশী সিম রাখা যাবেনা বলায়, কেউ কিছু বলেনি। এখন তারা চাচ্ছে, ৫টাতে আনতে। ক্রমান্বয়ে এভাবেই তারা নামাবে। আমাদেরকে বন্দী করবে সিন্ডিকেটের হাতে।
অথচ আপনার সিম কোনো বেনামী সিম না, এনআইডি আছে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট আছে।
চাইলেই খুঁজে পাচ্ছে।

বিটিআরসি কোন যুক্তিতে আমাদের সিম ব্যবহারের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে সিন্ডিকেটের কাছে বন্দী করাতে চায়?

এই সিন্ডিকেট করতে ফোন অপারেটর গুলো কত কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছে, আমরা জানতে চাই।